দিনাজপুরে বিশেষ সাধারণ সভার আড়ালে অবৈধভাবে আজীবন সভাপতি পদে থাকার ঘোষণা

মোঃ জাহিদ হোসেন, দিনাজপুর প্রতিনিধি ॥ 

ছবি সংগৃহীত 


বাংলাদেশে, ট্রেড ইউনিয়ন সম্পর্কিত আইন শ্রম আইন, (বাংলাদেশ শ্রম আইন, ২০০৬) দ্বারা পরিচালিত হয়। এর কিছু প্রধান দিক নিম্নরূপ: ১. ট্রেড ইউনিয়নের সংবিধান: প্রতিটি ট্রেড ইউনিয়নের নিজস্ব সংবিধান থাকে, 



যেখানে সংগঠনের কার্যপ্রণালী, নির্বাচন প্রক্রিয়া এবং সভাপতির কার্যকাল সম্পর্কিত নিয়মাবলি নির্ধারণ করা থাকে। সাধারণত সংবিধানে সভাপতির কার্যকাল নির্দিষ্ট থাকে এবং নিয়মিত নির্বাচন বাধ্যতামূলক করা হয়। ২. নির্বাচন ব্যবস্থা: বাংলাদেশ শ্রম আইন অনুযায়ী, ট্রেড ইউনিয়নের কার্যনির্বাহী কমিটির মেয়াদ সাধারণত ২-৩ বছর হয়। এরপর পুনরায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে হয়। ৩. আজীবন সভাপতির বিধান: শ্রম আইনে কোনো ব্যক্তি আজীবন সভাপতি থাকার সরাসরি অনুমোদন নেই। যদি ট্রেড ইউনিয়নের সংবিধান আজীবন সভাপতির কোনো বিধান রাখে, তবে তা শ্রম আইন ও গণতান্ত্রিক চেতনার সাথে সাংঘর্ষিক। 

শনিবার (২১ জুন) দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক ইউনিয়ন দিনাজপুর (২৯৩৬) এর একটি বিশেষ সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভাটি ঘিরে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। অভিযোগ উঠেছে যে, সভার আড়ালে সভাপতি জি.এম. মইনউদ্দিন হিরু বিরোধী মতের সদস্যদের বহিষ্কার করে নিজের সমর্থকদের নিয়ে আজীবন সভাপতি থাকার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন।

জানা গেছে, সভায় কোনো কেন্দ্রীয় বা বিশেষ প্রতিনিধি উপস্থিত ছিল না। এছাড়া বিরোধী মতের কোনো সদস্যকেও সভায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি। ফলে সিদ্ধান্ত গ্রহণের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

সভাপতি জি.এম মইনউদ্দিন হিরু আগে ঘোষণা করেছিলেন যে, ডিসেম্বরে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তবে অভিযোগ রয়েছে, নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি উপেক্ষা করে তিনি বিশেষ সভার মাধ্যমে আজীবন সভাপতি থাকার পন্থা নিশ্চিত করেছেন। অভিযোগ উঠেছে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের অনুদান পাইয়ে দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে, সভাপতি তার নিজের সমর্থকদের প্রভাবিত করেছেন।

অন্যদিকে, কিছুদিন আগেই বিরোধী মতের সদস্যদের অন্যায়ভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ রয়েছে এই বহিষ্কার ছিল উদ্দেশ্যপ্রণোদিত এবং এটি সভায় বিরোধী মতের সদস্যরা যেন কোনো বাধা সৃষ্টি না করতে পারে সেই কারণেই কৌশলে দিনাজপুর বীরগঞ্জ উপজেলার প্রেসক্লাবে বিশেষ সাধারণ সভা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

সাংবাদিকরা এই সিদ্ধান্তকে অগণতান্ত্রিক এবং স্বেচ্ছাচারী বলে অভিহিত করেছেন। তারা বিষয়টি সুষ্ঠু তদন্ত এবং কার্যকর নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন। তারা বলেন, সাংবাদিক ইউনিয়ন দিনাজপুর ২৯৩৬ এর সভাপতি সম্পূর্ণ অবৈধভাবে কাজ করেছেন, নির্বাচন প্রক্রিয়া পুরোপুরি ধ্বংস করেছেন, ঘোষণার মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের দোসররা বঙ্গবন্ধু সাংস্কৃতিক জোট দিনাজপুর জেলা শাখার সাংগঠনিক সম্পাদক সিকান্দার আলী কাবুলকে দিয়ে অবৈধভাবে ভাবে নির্বাচন ছাড়া আজীবন সভাপতির পদ পাওয়ার ঘোষণা করাচ্ছেন। এই সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক একের পর এক অনিয়মসহ আইনভঙ্গ করেই চলেছেন। 

দিনাজপুর বীরগঞ্জ উপজেলার প্রেস ক্লাবের আয়োজিত বিশেষ সাধারণ সভায় গৃহীত সিদ্ধান্তগুলো নিয়ে স্থানীয় সাংবাদিকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে। নির্বাচন নিয়ে দেওয়া প্রতিশ্রুতি এবং সদস্য বহিষ্কারের অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ে নিরপেক্ষ তদন্ত প্রয়োজন বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। সাংবাদিকরা সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট ও তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

উল্লেখ, সাংবাদিক ইউনিয়ন দিনাজপুর ২৯৩৬ এর সভাপতি জি এম হিরু ও সাধারণ সম্পাদক মাহফিজুল ইসলাম রিপনের নানা অনিয়ম ও স্বেচ্ছাচারিতার বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ হয়েছে। তারা আবারো একনায়কতন্ত্র কায়েম করেছেন। তারা যেকোনো ভাবেই হোক তাদের ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখার পন্থা অবলম্বন করছেন। যাহা ট্রেড আইন পরিপন্থী এটি কোনোভাবেই ট্রেড আইন অনুমোদন করেনা, এটি পাগলের প্রলাপ মাত্র।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.