দেশব্যাপী খুন-চাঁদাবাজির বিরুদ্ধে ইসলামী যুব আন্দোলনের বিক্ষোভ মিছিল।

মো লুৎফুর রহমান রাকিব স্টাফ রিপোর্টার।

ছবি একুশে ট্রিবিউন 


ঢাকার মিটফোর্ডে প্রকাশ্য দিবালোকে পাথর মেরে নির্মমভাবে একজন মানুষকে হত্যা, দেশব্যাপী চাঁদাবাজি, হত্যা ও সন্ত্রাসের প্রতিবাদে রবিবার (১৩জুলাই) বাদ যোহর ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা শাখার উদ্যোগে লাকসামে এক বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।


মিছিলটি লাকসাম মডেল মসজিদ চত্বর থেকে শুরু হয়ে লাকসাম বাজারের প্রধান সড়কসমূহ প্রদক্ষিণ করে বাইপাস চৌরাস্তায় এসে শেষ হয়। মিছিল পরবর্তী প্রতিবাদ সমাবেশে বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ রাষ্ট্রের চরম নিরাপত্তাহীনতা, প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তা ও বর্তমান রাজনৈতিক অপশক্তির বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।


সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশ কুমিল্লা দক্ষিণের সহ-সভাপতি আব্দুল মমিন মজুমদার। প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ-এর কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সদস্য ও কুমিল্লা দক্ষিণ জেলার সভাপতি মুফতি শামসুদ্দোহা আশরাফী।

বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন ইসলামী যুব আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক এবং লাকসাম পৌরসভার সম্ভাব্য মেয়র পদপ্রার্থী মাওলানা মোরশেদুল আলম।


এছাড়াও বক্তব্য রাখেন জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) লাকসাম উপজেলার প্রধান সমন্বয়ক আল মাহমুদ (ফজলে রাব্বী)।


বিএনপির বিরুদ্ধে তীব্র অভিযোগ


নেতৃবৃন্দ বলেন, “বিএনপি বর্তমানে সারাদেশে চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। দলীয় নেতাদের ছত্রছায়ায় গড়ে ওঠা সন্ত্রাসী বাহিনীগুলো সাধারণ মানুষের জানমাল লুণ্ঠন করছে, যা একটি ব্যর্থ নেতৃত্বের জঘন্য নিদর্শন।”

তারা হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, “চাঁদাবাজি ও খুনোখুনির জন্য অতীতে পতিত ফ্যাসিবাদের যেই পরিণতি হয়েছে, এই নব্য ফ্যাসিবাদেরও একই পরিণতি হবে। জনগণ আর চুপ করে বসে থাকবে না।”


প্রশাসনের ভূমিকা নিয়েও ক্ষোভ


সমাবেশে বক্তারা দেশের প্রশাসনিক কাঠামোরও তীব্র সমালোচনা করে বলেন, “জনগণের করের টাকায় যারা বেতন ভাতা নিচ্ছে, সেই প্রশাসন জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সম্পূর্ণরূপে ব্যর্থ। আজ প্রশাসন নিরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে, যা একপ্রকার রাষ্ট্রীয় প্রতারণা ছাড়া আর কিছু নয়।”


তারা আরও বলেন, “সরকারের এখনই উচিত প্রশাসনকে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত করে স্বাধীন ও কার্যকরভাবে দায়িত্ব পালনের সুযোগ করে দেওয়া। তা না হলে দেশ এক ভয়াবহ নিরাপত্তাহীন ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাবে।”


অংশগ্রহণকারী অন্যান্য নেতৃবৃন্দ


সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ-এর কেন্দ্রীয় আলিয়া মাদ্রাসা সম্পাদক ছাত্রনেতা রশীদ আহমদ রায়হান, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ কুমিল্লা দক্ষিণ জেলার সেক্রেটারি মাওলানা মাহমুদুর রহমান হাসিব, ইসলামী শ্রমিক আন্দোলন সভাপতি মাওলানা নুরে আলম, ইসলামী যুব আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান, ছাত্র আন্দোলনের সহ-সভাপতি নুরে আলম, এনসিপি লাকসাম উপজেলার সিনিয়র যুগ্ম সমন্বয়ক আশিকুল ইসলাম, সদস্য জিসান আহমেদ, মেহেদী হাসান, ইমান হোসেন, মনোহরগঞ্জ উপজেলার প্রধান সমন্বয়ক মোস্তাফিজুর রহমান মাসুদ ও যুগ্ম সমন্বয়ক আদিত্য শাহরিয়ারসহ আরও অনেকে।


সমাবেশ শেষে একটি প্রস্তাবনা পাঠ করে দেশব্যাপী নিরাপত্তা জোরদার, চাঁদাবাজ ও খুনীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এবং প্রশাসনের জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.