পটুয়াখালী ভার্সিটির উপাচার্যকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্যের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ


ছবি একুশে ট্রিবিউন 


পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (পবিপ্রবি' র ভিসি অধ্যাপক ড. কাজী রফিকুল ইসলামকে নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে কুরুচিপূর্ণ 

ও অপমানজনক মন্তব্যের প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে উঠেছে পুরো পবিপ্রবি ক্যাম্পাস। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীসহ সবাই এই মন্তব্যের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ ও প্রতিবাদ জানিয়েছেন।

ঘটনার সূত্রপাত হয় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) অ্যানিমেল সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. আবুল কালাম আজাদের একটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পোস্টকে কেন্দ্র করে। সেখানে তিনি পবিপ্রবির উপাচার্য সম্পর্কে অশোভন ও অবমাননাকর মন্তব্য করেন। পরবর্তীতে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়ে তিনি পোস্টটি মুছে দেন এবং দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চান। তবে এই ক্ষমা প্রকাশেও পবিপ্রবি পরিবার সন্তুষ্ট নয়।

বক্তব্যের প্রতিবাদে পবিপ্রবির অ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল বের করেন। মিছিলে ভেটেরিনারি স্টুডেন্ট অ্যাসোসিয়েশন, সংশ্লিষ্ট শিক্ষকগণ এবং বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থী ও কর্মচারীরা অংশ নেন। তাঁরা অধ্যাপক আজাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেন।

বিক্ষোভ শেষে শিক্ষার্থীদের পক্ষে দেওয়া এবং পরে ভেটেরিনারি ডিসিপ্লিনের শিক্ষকদের পক্ষ থেকে দেয়া পৃথক পৃথক বিবৃতিতে বলা হয়, “একজন সম্মানিত উপাচার্যকে নিয়ে এমন ভাষায় পোস্ট দেয়া কেবল একজন ব্যক্তি নয়, বরং গোটা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবারকেই অপমান করার শামিল। আমরা এই ঘটনার তীব্র নিন্দা জানাই এবং চাই প্রশাসন দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করুক।”

অ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ হিল কাফি বলেন, “একজন শিক্ষক হয়ে অধ্যাপক আজাদ যেভাবে কুরুচিপূর্ণ ভাষা ব্যবহার করেছেন, তা আমাদের জন্য অত্যন্ত দুঃখজনক। তাঁর এমন আচরণ শিক্ষকতার মহান পেশার মর্যাদা নষ্ট করেছে। তিনি প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইবেন এবং প্রশাসনের উচিত তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া।”

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকেও এ ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানানো হয়েছে। এক বিবৃতিতে জানানো হয়, অধ্যাপক ড. কাজী রফিকুল ইসলাম একজন খ্যাতনামা গবেষক ও শিক্ষক, যার নেতৃত্বে পবিপ্রবি সারাদেশে সুনাম অর্জন করেছে। এমন একজন শিক্ষাবিদের বিরুদ্ধে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য গ্রহণযোগ্য নয়। এটি পেশাদারিত্ব ও শালীনতার পরিপন্থী।

জানা গেছে, ৩১ জুলাই (বৃহস্পতিবার) অ্যানিমেল হাজবেন্ড্রি ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থীরা “কম্বাইন্ড ডিগ্রি” বাস্তবায়নের দাবিতে উপাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। সেখানে উপাচার্য তাঁদের দাবি যৌক্তিক বলে মন্তব্য করেন এবং বলেন, “এখন সময় এসেছে কম্বাইন্ড ডিগ্রির।” এই বক্তব্য পবিপ্রবি সাংবাদিক সমিতির ফেসবুক পেজে প্রকাশিত হলে অধ্যাপক আজাদ সেটি নিয়ে অশোভন মন্তব্য করেন।

এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয়ে শুধু পবিপ্রবি নয়, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভেটেরিনারি মেডিসিন অনুষদের ফার্মাকোলজি বিভাগের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরাও প্রতিবাদে সরব হন। তাঁরা এক বিবৃতিতে অধ্যাপক আজাদের মন্তব্যের তীব্র নিন্দা জানিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন এবং উপাচার্যের সম্মান রক্ষায় একাত্মতা প্রকাশ করেন।

জানা গেছে, এ ঘটনার প্রতিবাদে আগামীকাল সকালে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসেও শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল করবে।

পবিপ্রবি পরিবার জানিয়েছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ ও মর্যাদা রক্ষায় এ ধরনের অনাকাঙ্ক্ষিত আচরণের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নেওয়া হবে এবং প্রশাসনের প্রতি আহ্বান জানানো হয় দোষীর বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের।


   জাকির হোসেন হাওলাদার সাংবাদিক দুমকি পটুয়াখালী মোবাইল নম্বর,০১৭৩৯৪৮৮৫৭৪।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.