still attribute

⁠☞⁠ "একুশে ট্রিবিউন একটি অনলাইন বৃহৎতম পাঠক প্রিয়ো গনমাধ্যম প্রাথমিক ভাবে পরিক্ষা মূলক শাহাজাদ ইসলাম কর্তৃক চালু করা হয়েছে। ঠাকুরগাঁও-৫১০১ ঢাকা বাংলাদেশ"মোবাইল 📞+৮৮০১৭২১৪৪৭২৩০ ইমেইল☞⁠ sahajadislam2019@gmail.com

-->

সেদিন কনস্টেবলের অস্ত্র দিয়ে গুলি ছুড়েছেন সহকারী কমিশনার EkusheyTribune

রংপুর প্রতিনিধি ঃ




কোটা সংস্কার আন্দোলন চলাকালে বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী আবু সাঈদকে গুলি করেছে কে, তা নিয়ে চলছে আলোচনা-সমালোচনা। গুলি করার সময় সেখানে পুলিশের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও প্রশাসনিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। 


র মধ্যে হেলমেট পরা তাদের একজন পুলিশকে গুলি করতে বলেছেন, এমন দৃশ্য ভিডিওতে দেখা গেছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, ঘটনার দিন রংপুর মহানগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (কোতোয়ালি জোন) মো. আরিফুজ্জামানকে গুলি ছুড়তে দেখা যায়। তিনি এক কনস্টেবলের কাছ থেকে অস্ত্র নিয়ে শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়েছেন। তবে ওই কনস্টেবলের পরিচয় জানায়নি পুলিশ।


ইতোমধ্যে সাঈদ নিহতের ঘটনায় পুলিশের একজন সহকারী উপপরিদর্শকসহ (এএসআই) দুই পুলিশকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তারা হলেন রংপুর মহানগর পুলিশের এএসআই আমির হোসেন ও তাজহাট থানার কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়। সাময়িক বরখাস্তের কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, তারা ‘অপেশাদারি আচরণস্বরূপ’ শটগান থেকে ফায়ার করেছেন। 



তবে পুলিশের একটি সূত্র একুশে ট্রিবিউনকে জানিয়েছে, সেদিন ঘটনাস্থলে উপস্থিত মহানগর পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. আল ইমরান হোসেনের (পরশুরাম জোন) ও সহকারী কমিশনার মো. আরিফুজ্জামানের নির্দেশে তারা গুলি ছুড়েছেন। পুলিশের ছোড়া গুলিতেই আবু সাঈদ মারা গেছেন, তবে কার ছোড়া গুলিতে মারা গেছেন, তা নিশ্চিত করতে পারেনি পুলিশের এই সূত্র।




এ ব্যাপারে জানতে পুলিশের সহকারী কমিশনার মো. আরিফুজ্জামানকে ফোন দিয়ে একুশে ট্রিবিউনের সাংবাদিক পরিচয় দিতেই কল কেটে দেন। এরপর কল দিলে কেটে ফোন বন্ধ করে দেন। একই বিষয়ে জানতে পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. আল ইমরান হোসেনকে ফোন দিলে রিসিভ করেননি।


এ বিষয়ে জানতে বরখাস্ত দুই পুলিশ সদস্য হলেন সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আমির হোসেন ও কনস্টেবল সুজন চন্দ্র রায়কে কল দিলে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি।


সাঈদি হত্যার ঘটনায় দুই পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্তের খবর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছড়িয়ে পড়লে শিক্ষার্থীরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মুনতাসীর ও তাসনুভা বলেন, ‘আমরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিও ফুটেজে দেখেছি সাঈদকে টার্গেট করে গুলি করা হয়েছে। সেখানে সহকারী পুলিশ কমিশনার আরিফুজ্জামান এক পুলিশ সদস্যের কাছ থেকে অস্ত্র নিয়ে দুই দফা গুলি ছুড়েছেন। এই ভিডিও বহু মানুষ দেখেছে। 


তারপরও আরিফুজ্জামানের বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তাকে বরখাস্ত করলে হবে না, হত্যার ঘটনায় গ্রেফতার করতে হবে। আমরা শুনেছি, তিনি গুলি ছোড়ার পাশাপাশি অন্য পুলিশ সদস্যদের গুলি করার নির্দেশ দিয়েছেন। তার সেই নির্দেশের ভিডিও ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।’


বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক আবু ছালেহ মোহাম্মদ ওয়াদুদুর রহমান (তুহিন ওয়াদুদ) বলেন, ‘যারা অতি উৎসাহী হয়ে গুলি করে সাঈদকে হত্যা করেছে তাদের বরখাস্ত করলেই সব দায়িত্ব শেষ হয় না। যিনি বা যারা গুলি করার হুকুম দিয়েছে তাদেরও আইনের আওতায় আনতে হবে।’


এদিকে, সাঈদ নিহতের ঘটনায় তাজহাট থানায় একটি মামলা করেছেন রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই বিভূতিভূষণ রায়। সেখানে ইটপাটকেলের আঘাতে সাঈদের মৃত্যুর কথা উল্লেখ করা হয়। গুলিতে নিহতের ঘটনা কীভাবে ইটপাটকেলের আঘাত হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে জানতে চাইলে বিভূতিভূষণ রায় বলেন, ‌‘এই মামলার বিষয়ে আমি বিস্তারিত জানি না। তাজহাট থানার ওসির নির্দেশে মামলাটি করা হয়। এখানে কাকে আসামি করা হবে, তার নির্দেশনাও থানা থেকে দেওয়া হয়েছিল। আমাকে যেভাবে এজাহার লিখতে বলা হয়েছিল, সেভাবে লিখেছি। এ নিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ভালো জানেন।’


মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তাজহাট থানার উপপরিদর্শক (এসআই) জিল্লুর রহমান একুশে ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ওই মামলায় এক এইচএসসি পরীক্ষার্থীকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। পরে তার জামিন মঞ্জুর করেছেন আদালত। এই মামলায় আর কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। ব্যস্ততার কারণে মামলার তদন্তকাজ এখনও পুরোপুরি শুরু করতে পারিনি। তবে তদন্তে যারাই অভিযুক্ত হবেন, তাদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেওয়া হবে।’


তদন্ত পুরোপুরি শুরুর আগে কীভাবে ওই পরীক্ষার্থীকে গ্রেফতার করা হয়েছে জানতে চাইলে জিল্লুর রহমান বলেন, ‘প্রাথমিক অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয়েছিল।’


প্রাথমিক তদন্তে গুলি ছোড়া এবং নির্দেশদাতা সম্পর্কে কিছু জানা গেছে কিনা, জানতে চাইলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আরও বলেন, ‘শুনেছি, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশ ছাড়াই গুলি ছোড়া হয়েছিল। কেউ নির্দেশ দিয়েছেন কিনা, তা এখনও জানা সম্ভব হয়নি।’


সেদিন ঘটনাস্থলে উপস্থিত ছিলেন মহানগর পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার মো. আল ইমরান হোসেন ও সহকারী কমিশনার মো. আরিফুজ্জামান

দুজনকে সাময়িক বরখাস্তের তথ্য নিশ্চিত করে রংপুর মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. মনিরুজ্জামান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আবু সাঈদ নিহত হওয়ার ঘটনায় ১৮ জুলাই পুলিশের পক্ষ থেকে চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। কমিটি ১ আগস্টে আংশিক প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন। তদন্তে মৃত্যুর ঘটনায় এই দুই পুলিশ সদস্যের অপেশাদারি আচরণ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাদের ওই দিনই সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। ইতোমধ্যে তাদের পুলিশ লাইনসে সংযুক্ত করা হয়েছে। এ ঘটনায় আরও তদন্ত চলছে। পুরো বিষয়টি জানার পর অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’


গত ১৬ জুলাই বেলা আড়াইটার দিকে রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের সড়কে কোটা সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশ ও ছাত্রলীগের পাল্টাপাল্টি ধাওয়া এবং সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

এ সময় গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের ১২তম ব্যাচের শিক্ষার্থী আবু সাঈদ। তিনি পীরগঞ্জ উপজেলার মদনখালী ইউনিয়নের বাবনপুর গ্রামের মকবুল হোসেন ও মনোয়ারা বেগম দম্পতির ছেলে।


ঘটনার একাধিক ভিডিও ফুটেজে দেখা যায়, আন্দোলনকারীদের ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচি চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনের সড়কে পুলিশ আবু সাঈদকে খুব কাছ থেকে গুলি করে। সাঈদ এক হাতে ক্রিকেট খেলার একটি স্ট্যাম্প নিয়ে দুই হাত প্রসারিত করে বুক পেতে দেন। কিছুক্ষণের মধ্যেই তিনি লুটিয়ে পড়েন।


একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.