গরীব কৃষকের ফসল নষ্টের অভিযোগ আওয়ামী লীগের সম্পাদক আরফান আলীর বিরুদ্ধে

ডেস্ক রিপোর্ট:

ছবি একুশে ট্রিবিউন 


দলের প্রভাব, পুরনো ক্ষমতার রেশ আর প্রশাসনের নীরবতা এই তিনটি মিলে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার রাজাগাঁও ইউনিয়নে ঘটেছে এক ন্যক্কারজনক ঘটনা।

উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমবায় বিষয়ক সম্পাদক এবং ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ সহযোগী বলে পরিচিত সাবেক মেম্বার আরফান আলীর বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে, তিনি বা তার সহযোগীরা ইচ্ছাকৃতভাবে কীটনাশক ছিটিয়ে গরীব কৃষক আশরাফ আলীর মাসকালাইয়ের ফসল নষ্ট করেছেন।


সেনুয়া ইউনিয়নের চামেশ্বরী গ্রামের মৃত মজনুর রহমানের ছেলে আশরাফ আলী জানান চামেশ্বরী মৌজার ২১৪ নং খতিয়ানভূক্ত ২৫৬৯ নং দাগে মোট ২৫ শতক জমির মধ্যে সাড়ে ১২ শতক তিনি খোশ কবলা মূলে ক্রয় করে বহু বছর ধরে ভোগদখল করছেন।

তবে জমি কেনার পর থেকেই সাবেক মেম্বার আরফান আলী ও তার লোকজন জমি দখলের চেষ্টা চালিয়ে আসছেন। একাধিকবার হুমকি, ভয়ভীতি ও সামাজিক চাপের মাধ্যমে জমি ছাড়তে বলা হয়, কিন্তু আশরাফ আলী জমি ছাড়েননি।


গত ৭ আগস্ট সকাল আনুমানিক ৮টার দিকে আশরাফ আলী তার মাসকালাই ক্ষেত দেখতে যান। দূর থেকেই তিনি দেখতে পান, আরফান আলীসহ কয়েকজন ব্যক্তি তার ক্ষেতের উপর কীটনাশক স্প্রে করছেন।

আশরাফ আলী এগিয়ে গেলে অভিযুক্তরা তড়িঘড়ি করে সেখান থেকে সরে যান। ক্ষেতজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে তীব্র গন্ধ, আর সেদিনের মধ্যেই গাছগুলো বিবর্ণ হয়ে পড়তে শুরু করে।

আশরাফ আলী বলেন “আমি গরীব মানুষ। অনেক কষ্টে সাড়ে ১২ শতক জমিতে বীজ বপন করেছিলাম। এই ফসলই ছিল আমার পরিবারের ভাতের ভরসা। শত্রুতার জেরে আমার সব শেষ করে দিল। আমি থানায় লিখিত অভিযোগ করেছি এবং ন্যায়বিচার চাই।”

তিনি আরও জানান, এই ফসলের জন্য তিনি ধারদেনা করেছিলেন, এখন ফসল নষ্ট হয়ে যাওয়ায় তিনি চরম অর্থকষ্টে পড়েছেন।



অভিযুক্ত আরফান আলীর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি একাধিকবার মুঠোফোনে টালবাহানা করেন এবং শেষ পর্যন্ত কল কেটে দেন।

স্থানীয় একাধিক মানুষের অভিযোগ, তিনি এইরকম ক্ষমতার বহর দেখিয়ে  একাধিক গরিব,অসহায় মানুষের সাথে প্রতারনা,দূর্নীতি, চাঁদাবাজি, ও টেন্ডারবাজি করে আসছেন। তিনি আওয়ামী লীগের দোষর হয়ে প্রশাসনের নাকের ডগায় প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তার বিরুদ্ধে এই ধরনের একাধিক অভিযোগ থাকার পরেও অথচ প্রশাসন তাকে গ্রেপ্তারের কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। 

স্থানীয়রা আরো অভিযোগ তুলে বলেন,"একই ভাবে কয়েক বছর আগে ক্ষমতার বহর দেখিয়ে এক অসহায় মহিলাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে জেল খাটিয়ে হয়রানি করেন এই আরফান আলী।  


রুহিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) এ.কে.এম নাজমুলের কাদের জানান “অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”


এদিকে এলাকায় এই ঘটনা নিয়ে তীব্র ক্ষোভ ছড়িয়ে পড়েছে। কৃষকেরা বলছেন, রাজনৈতিক প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করলেই সাধারণত মামলা ধীরগতিতে চলে বা ধামাচাপা পড়ে যায়, যার ফল ভোগ করতে হয় গরীব মানুষেরই।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.