রুহিয়ায় কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশনের মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি, 

ছবি একুশে ট্রিবিউন 


জুলাই বিপ্লবের বাংলায় বৈষম্যের ঠাঁই নাই" স্লোগানে ঠাকুরগাঁওয়ের রুহিয়ায় পঞ্চম শ্রেণির প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠার শিক্ষার্থীদেরকে অংশগ্রহণের সুযোগ না দেয়ার প্রতিবাদে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। 

রবিবার (২৭ জুলাই) সকাল ১১:৩০ মিনিটে রুহিয়া চৌরাস্তায় বাংলাদেশ কিন্ডারগার্টেন এসোসিয়েশন ঐক্য পরিষদ রুহিয়া থানা শাখার আয়োজনে মোঃ আব্দুল আলীম এর সভাপতিত্বে এবং রুহিয়া ব্রাইট স্টার মডেল স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ অশ্বিনী কুমার বর্মনের সঞ্চালনায় মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে রুহিয়া থানার ১৭ টি কিন্ডারগার্টেনের শিক্ষক কর্মচারী ও শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন দিশারী কিন্ডারগার্টেন এর অধ্যক্ষ অনন্ত কুমার দাস,সান রাইজ কিন্ডারগার্টেন এর অধ্যক্ষ রফিকুল ইসলাম, আখানগর কিন্ডারগার্টেন এর অধ্যক্ষ সাইফুল ইসলাম। এছাড়াও বক্তব্য রাখেন ব্রাইট স্টার মডেল স্কুলের ৫ম শ্রেণির শিক্ষার্থী রত্না , সুমাইয়া,আরমান, এ.বি কিন্ডারগার্টেন এর শিক্ষার্থী সামি, হিমু। এ সময় বক্তৃতারা বলেন, প্রাথমিক শিক্ষায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পাশাপাশি নিজস্ব অর্থায়নে পরিচালিত কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো শিক্ষাক্ষেত্রে এক যুগান্তকারী ও সময়োপযোগী ভূমিকা পালন করে চলছে এবং কিছুটা হলেও বেকার সমস্যা দূরীকরণে ভূমিকা রাখছে। কিন্তু হঠাৎ করে গত ১৫ জুলাই প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরে নির্বাহী কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক স্মারক নং- ৩৮.০১.০০০০.১০৭.৩৩.০০১.২০২৫ মারফত ১৭ জুলাই প্রকাশিত পত্রের 

মাধ্যমে জানতে পারি যে, কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীকে বৃত্তি পরীক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে। শুধুমাত্র সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের বৃত্তি পরীক্ষা-২০২৫ অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। পত্রটি বৈষম্যমূলক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। ২০০৯ সাল থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত অনুষ্ঠিত প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা ও ২০২২ সালে অনুষ্ঠিত বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ব্যাপক কৃতিত্ব অর্জন করেছে। বৃত্তি শুধু একটি আর্থিক অনুদানই নয় এটি একটি শিশুর আত্মবিশ্বাস, মেধার স্বীকৃতি এবং শিক্ষাগত অগ্রগতির অনুপ্রেরণা। যখন একটি শিশু দেখবে তার বন্ধুরা প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে কিন্তু শুধুমাত্র তার বিদ্যালয়ের স্বীকৃতির ধরন ভিন্ন বলে সে অংশগ্রহণ করতে পারছে না। তখন তার মনে নেতিবাচক 

প্রভাব পড়বে এবং কোমলমতি শিশুদের মধ্যেই একটি বৈষম্যমূলক মনোভাব তৈরি হবে। কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা যদি প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে না পারে তাহলে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকগণ মানষিক চাপ ও যন্ত্রণার সম্মুখীন হবে তার দায়-দায়িত্ব সরকারের উপরেই বর্তাবে। জুলাই বিপ্লবে বৈষম্যের বিরুদ্ধে অনেক শিক্ষার্থীর আত্মত্যাগের বিনিময়ে প্রতিষ্ঠিত বৈষম্যবিরোধী সরকার। সেই সরকারের আমলে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা আবার বৈষম্যের শিকার হবে এটি অপ্রত্যাশিত। প্রাতিষ্ঠানিক বৃত্তি নয়, আমরা মেধার মূল্যায়ন চাই। বক্তাগণ মাননীয় প্রধান উপদেষ্টা মহোদয়কে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনি আমাদের 

অভিভাবক এবং শিক্ষার্থীদের আশা ও ভরসার প্রতীক। দেশের জনগণ আপনার প্রতি আস্থাশীল। সরকারি প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য কিন্ডারগার্টেন ও বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকসহ বিশাল জনগোষ্ঠীকে যাতে আন্দোলনে নামতে না হয় সেই বিষয়ে আপনার সুদৃষ্টি কামনা করছি এবং ১৭ জুলাই ২০২৫ তারিখে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক অবহিতকরণ পত্রটি বাতিল করে দেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা যাতে পঞ্চম শ্রেণির সরকারি প্রাথমিক বৃত্তি পরীক্ষা-২০২৫ এ অংশগ্রহণ করতে পারে, তার ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানাচ্ছি। মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসক ঠাকুরগাঁও বরাবর একটি স্মারক লিপি প্রদান করা হয়।

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.