পশ্চিমবঙ্গের আশা কর্মীদের- মানব যাত্রা- মিছিল আটকালেন- পুলিশের গাড়ী দিয়ে রাস্তায় ব্যারিকেড করে।

ছবি একুশে ট্রিবিউন 


গতকাল ২২শে আগস্ট শুক্রবার, ঠিক দুপুর সাড়ে বারোটায়, রাসবিহারী মোড়ে, সাড়া পশ্চিমবঙ্গ থেকে ১০ থেকে ১২ হাজারেও বেশী আশা কর্মী জমায়েত হন, বেলা দুটো নাগাদ, এ আই ইউ টি ইউ সি অনুমোদিত, পশ্চিমবঙ্গ আশা কর্মী ইউনিয়ন এবং পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্য কর্মী কন্টাকচুয়াল ইউনিয়নের উদ্যোগে এই মানব যাত্রা ও বিক্ষোভ মিছিল শুরু হয়। 


মানব যাত্রায় নেতৃত্ব দেন, এ আই ইউ টি ইউ সি এর সম্পাদিকা ইসমত আরা খাতুন, সভানেত্রী কৃষ্ণা প্রধান, এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কেকা পাল, পৌলমী করঞ্জয়, সুশীলা, মধুমিতা মুখার্জি, পাপিয়া দত্ত চৌধুরী সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।


বৃষ্টিকে পিছনে ফেলে, তারা এই বিশাল - মানব যাত্রা - মুখ্যমন্ত্রীর নিকট ডেপুটেশন দিতে, রাসবিহারী মোড় থেকে শুরু করে দেশপ্রিয় পার্ক হয়ে পুনরায় রাশবিহারী মোড় হয়ে কালীঘাটের দিকে এগোতে থাকেন, সেই পুলিশ প্রশাসনের অফিসারেরা মিছিল আটকাতে , ডিউটি রত অফিসারদের গাড়ি পর পর রাস্তার মধ্যে দাঁড় করিয়ে মিছিল আটকে দেন, তার পরেই শুরু হয়, ঠেলা ঠেলি আশা কর্মীদের সহিত, 


পুলিশ প্রশাসনের অফিসাররা রাস্তা আটকে দেওয়ার ফলে ও বৃষ্টির মধ্যে আশা কর্মীরা জল ও কাদার মধ্যে সমস্ত যান চলাচল আটকে রাসবিহারী মোরে বসে পরেন। 

তাদের একটাই দাবী হয় আমাদের দাবী গুলি মেনে নিতে হবে, নতুনবা আমাদের সাথে দেখা করতে দিতে হবে। আর আমাদের ডেপুটেশনের কপিতে সই করে দিতে হবে। না আজ আমরা রাসবিহারী মোড় অবরুদ্ধ করে দেবো, আমরা ন্যায্য দাবী আদায় করে নেব।


পশ্চিমবঙ্গের মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী খেলা মেলায় কোটি কোটি টাকা দিতে পারছেন, টাকা খরচা করতে পারছেন, অথচ আমাদের দিয়ে সব কাজ করিয়ে নিচ্ছেন, আর আমাদের মাইনে ও সুযোগ সুবিধার বেলা চুপ করে আছেন, আমরা সরকারি প্রকল্পে কাজ করি, তাই আমাদেরও সরকারি নিয়ম অনুযায়ী সমস্ত সুযোগ সুবিধা দিতে হবে শিগগিরি, নচেৎ পূজোর আগেই আমারা সমস্ত কাজ বন্ধ করে দেবো, দেখবো কী করে বাইরের লোক নিয়ে এসে কাজ করাতে পারে, আরো জানা যায় , একজন আশা কর্মী ক্যাসারে আক্রান্ত, তবুও তিনি কোনো দিনও কাজ বন্ধ করেন, পেটের জ্বালায় বাধ্য হন কাজে যেতে, কিন্তু তাও কেও সময়ে সামান্য মাইনে প্রতিমাসে পাননা । তিন ঢার মাস করে মাসের পাওনা টাকা বাকী, অবিলম্বে আমাদের পাওনা টাকা মেটাতে হবে। বহুবার আমার আন্দোলন করেছি, ডেপুটেশন দিয়েছি, কোনো রকম সহানুভূতি দেখান‌ না , আমাদের সাথে আলোচনায় বসেন না , তাই বাধ্য হয়েই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি।


আমাদের দাবী..... ৫২৫০ টাকা নয়, রাজ্য সরকারের ঘোষিত ন্যূনতম ভাতা- মিনিমাম ওয়েজ- আশা কর্মীদের জন্য বরাদ্দ করতে হবে। 


কর্মরত অবস্থায় মৃত আশা কর্মীদের পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা করে দিতে হবে। 


আশা কর্মীদের বেতনে বছরে ৩% হারে ইনক্রিমেন্ট করতে হবে। 


পাহাড়ে আশা কর্মীদের ইন্সেন্টিভ ফিক্সট ভাতার সমপরিমাণ দিতে হবে। 


আশা কর্মীদের ছমাস মাতৃত্বকালীন ছুটিসহ , সরকার ঘোষিত সমস্ত প্রকার ছুটি দিতে হবে।


আশা কর্মীদের সরকারি স্বাস্থ্য কর্মীর স্বীকৃতি দিতে হবে।


মাসের পর মাস ইনসেন্টিভের টাকা বাকি রাখা চলবে না, ভাগে ভাগে ইনসেন্টিভ দেওয়া চলবে না।


ইন্সেন্টিভ এর সমস্ত টাকা বিনা শর্তে দিতে হবে এবং প্রতিটি আইটেমের দ্বিগুণ বৃদ্ধি করতে হবে। 


আশা কর্মীদের শাড়ির জন্য প্রতিবছর ১৫০০ টাকা ধার্য করতে হবে। 


করোনা আক্রান্ত আশা কর্মীদের জন্য ঘোষিত এক লক্ষ টাকা অবিলম্বে দিতে হবে। 


এই সকল দাবীকে কেন্দ্র করে, এবং তাদের উপর যে জুলুমবাজী চলছে, অতিরিক্ত কাজ করিয়ে নেয়া হচ্ছে, অতিরিক্ত কাজের কোন মজুরি না পাওয়ায়, আজ বিক্ষোভ করলেন ,


বেশ কিছুক্ষণ প্রতিবাদ চলার পর, প্রশাসনের অফিসারেরা তাহাদের কয়েক জনকে নিয়ে, মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীর কাছে এবং স্বাস্থ্য দপ্তরে ডেপুটেশন দিতে নিয়ে গেলেন। পুলিশ গাড়িতে করে। জানিয়ে যান যতক্ষণ না আমরা আসছি এ আন্দোলন চলবে, আমরা আশা করব মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী আমাদের আবেদন রাখবেন। 


রিপোর্টার , সমরেশ রায় ও শম্পা দাস , কলকাতা, পশ্চিমবঙ্গ

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

0 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.